বিদ্যালয়ের ইতিহাস
রাঙ্গুনীয়া খিলমোগল রসিক উচ্চ বিদ্যালয়, রাঙ্গুনীয়া, চট্টগ্রাম ৩নং স্বনির্ভর রাঙ্গুনীয়া ইউনিয়নের উত্তর সাবেক রাঙ্গুনীয়া গ্রামে অবস্থিত। ১৯২৬ সালে স্বর্গীয় রসিক চন্দ্র চৌধুরী প্রদত্ত দানকৃত জমির উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরবর্তীতে স্বর্গীয় বীরেন্দ্র লাল পাল ও প্রয়াত আবদুল ছোবাহান তালুকদার বিদ্যালয়ের নামে জমিদান করেন। এই বিদ্যালয়টি ৩নং স্বনির্ভর রাঙ্গুনীয়া ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে ২নং হোচনাবাদ ইউনিয়ন ও ৫নং পারুয়া ইউনিয়নের সংযোগস্থলে প্রতিষ্ঠালাভ করে। যুগ যুগ ধরে এই তিন ইউনিয়নের অধিবাসীগণ এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে আসছে। বিদ্যালয়টি প্রাক্তন শিক্ষা অফিসার মরহুম হাজী আজিজুর রহমান এর অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯৪৪ ইং সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রথম একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। মরহুম হাজী আজিজুর রহমান সাহেব এই বিদ্যালয়ে ১৯৫০-১৯৫৬ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব ও পালন করেন। বৃহত্তর ৫নং পারুয়া ইউনিয়ন, ২নং হোচনাবাদ ইউনিয়ন ও ৩নং স্বনির্ভর রাঙ্গুনীয়া ইউনিয়নের শিক্ষানুরাগী মহান ব্যক্তিবর্গ যথাঃ স্বর্গীয় রসিক চন্দ্র চৌধুরী, মরহুম হাজী আজিজুর রহমান, মরহুম গুরা মিয়া চৌধুরী, স্বর্গীয় যতীশ চন্দ্র চৌধুরী, স্বর্গীয় শুধাংশু বিমল বিশ্বাস, মরহুম আনোয়ার হোসেন চৌধুরী চেয়ারম্যান, জনাব রফিকুল ইসলাম চৌধুরী চেয়ারম্যান, স্বর্গীয় যদু গোপাল সাহা, মরহুম এ এইচ এম আবুল কাশেম (অনারারী মেজিস্ট্রেট), স্বর্গীয় ননী গোপাল চক্রবর্তী, স্বর্গীয় সুরেন্দ্র লাল সাহা, মরহুম ছৈয়দ আহমদ তালুকদার চেয়ারম্যান, স্বর্গীয় অতুল চন্দ্র চৌধুরী, মরহুম আলী আকবর তালুকদার, স্বর্গীয় বীরেন্দ্র লাল পাল, মরহুম সুলতান আহমেদ তালুকদার(প্রাক্তন এস.ডি.ও), মরহুম হাসমত আলী চৌধুরী (প্রাক্তন শিক্ষক), মরহুম আবদুল করিম মাতব্বর(প্রাক্তন শিক্ষক), মরহুম ওয়াকিল আহম্মদ তালুকদার চেয়ারম্যান, মরহুম আবদুস ছোবহান তালুকদার ও মরহুম মির্জা ওয়াহেদ আলী মিয়া এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় জড়িত ছিলেন।
সুপ্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে যুগে যুগে অনেক কৃতি সন্ত্রান শিক্ষা লাভ করেছেন। তৎমধ্যে এ,আই,জি অব পুলিশ জনাব নুরুল আলম, ডি.ডি মোঃ ছালেহ আহমদ, সাবেক আই.জি.পি জনাব খোদাবক্স চৌধুরী, ইঞ্জীনিয়ার আমিনুর রহমান, ডাঃ রেজাউল করিম, ডাঃ সুকুমার নন্দী, জনাব নুরুল আলম সাবেক এম.পি (রাজনীতিবিদ) সহ অনেক নাম জানা অজনা কৃতি সন্তান এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
১৯৬৫ পরবর্তী ছাত্র আন্দোলন, পাকিস্তানের সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ এর গণ অভ্যূত্থান ও ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের অবদান অনস্বীকার্য।
এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শহীদ নুরুন্নবী ও শংকর সাহা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে শহীদ হন। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এ,আই,জি অব পুলিশ জনাব নুরুল আলম,মুক্তিযুদ্ধে রাঙ্গুনীয়া উপজেলায় অপারেশনাল প্রধান হিসাবে এবং মোঃ ছালেহ আহমদ (সাবেক ডিডি) থানা প্রধান হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেন। এছাড়া ও এই বিদ্যালয়টি স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহ্নত হয় এবং বিদ্যালয়ের ৩৯ জন প্রাক্তনছাত্র মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষণ গ্রহন পূর্বক পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মূখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে লেখপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান।